ভিজিএফ এর চাল বিতরণ ডিমলায় ঈদুল আযহা উপলক্ষে ৩১০০ পরিবারের মধ্যে
মো: ফেরদৌসকিবরিয়া (নয়ন) প্রকাশক ও সম্পাদক
জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের আওতায় নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার ৪ নম্বর খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নে শুরু হয়েছে ভিজিএফ চাল বিতরণ কার্যক্রম। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিনামূল্যে এই চাল বিতরণ কার্যক্রম চলছে।
৩ জুন (মঙ্গলবার) সকাল থেকে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। এখানে ৩১০০ জন হতদরিদ্র, দিনমজুর, বিধবা, অসহায় ও নিম্নআয়ের পরিবারকে ১০ কেজি করে খাদ্যশস্য (চাল) প্রদান করা হচ্ছে। তিনজন উপকারভোগীকে একত্রে একটি ৩০ কেজির বস্তা দেওয়া হচ্ছে, যাতে দ্রুত ও সুশৃঙ্খলভাবে বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন করা যায়।
ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ মাজেদুর রহমান বুলু গণমাধ্যমকে জানান,
“আমি সদ্য দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। জনগণের সঙ্গে থেকে কাজ করাই আমার অগ্রাধিকার। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে চালের ওজন এবং সঠিক বন্টন নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। এলাকাবাসীর সহযোগিতা নিয়ে যাতে কোনো অনিয়ম না হয়, সে লক্ষ্যেই কাজ করছি। সকলকে ধৈর্য ও সচেতনতার সাথে লাইনে দাঁড়িয়ে চাল গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।”
চাল বিতরণ কার্যক্রমের সরকারি মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকা ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা নাজিমুল ইসলাম জানান,
“খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ভিজিএফ কার্যক্রম অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে চলছে। ৩১০০ জনের মাঝে চাল বিতরণ কার্যক্রমে এখন পর্যন্ত কোনো ধরণের অভিযোগ বা বিশৃঙ্খলা দেখা যায়নি। আমরা নিয়মিত ওজন যাচাই করছি এবং তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের নাম ধরে ধরে ডাকা হচ্ছে।”
চাল বিতরণ কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছেন। তারা প্রতিটি টোকেন যাচাই করে তালিকাভুক্ত ব্যক্তিকে চাল পৌঁছে দিতে সহযোগিতা করছেন। এতে দেখা গেছে, নারী সদস্যরাও পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিতরণ কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।
বিতরণের পুরো কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শনে আসেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন,
“খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নে যেভাবে সুশৃঙ্খল পরিবেশে ও স্বচ্ছতার সঙ্গে চাল বিতরণ চলছে, তা প্রশংসনীয়। চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের মধ্যে যে সমন্বয় ও সহযোগিতা দেখলাম, তা অন্যান্য ইউনিয়নের জন্য উদাহরণ হতে পারে।”
চাল গ্রহণ করতে আসা কয়েকজন নারী ও বৃদ্ধ উপকারভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা এই সহযোগিতায় সন্তুষ্ট। একজন বৃদ্ধা জানান,
“ঈদের আগে এই চাল পেয়ে অনেক উপকার হলো। বাজারে চালের দাম বেশি, এই ১০ কেজি চাল এখন অনেক মূল্যবান আমাদের জন্য।”
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এই মানবিক সহায়তা কার্যক্রম শুধু খাদ্য নয়, ঈদের আগমুহূর্তে দরিদ্র মানুষের মনে স্বস্তি ও আশার আলো জাগিয়েছে। যদি এই কার্যক্রমের স্বচ্ছতা এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি সর্বত্র বজায় থাকে, তবে তা সমাজে ন্যায্যতার বার্তা পৌঁছে দেবে।
কোন মন্তব্য নেই
দৈনিক সময়ের পত্রিকা