মোঃ আবুল কালাম আজাদ সরকার, ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার দক্ষিণ সুন্দর খাতা এলাকায় সিঙ্গাহারা নদীর ওপর নির্মিত সরু সেতুটি এখন আশপাশের ছয় গ্রামের মানুষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় ৩০-৩৫ বছর আগে নির্মিত এই সেতুটি মাত্র ৬ ফুট প্রশস্ত ও ১০০ মিটার দীর্ঘ। বর্তমানে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে—দুই পাশের রেলিং ভাঙা, লোহার রড বেরিয়ে আছে এবং ঢালু অংশে প্রায়ই অটোরিকশা দুর্ঘটনার শিকার হয়।
সেতুটি দিয়ে কেবল মোটরসাইকেল, অটোরিকশা ও ভ্যান চলাচল করতে পারে। অন্য কোনো বড় যানবাহন, যেমন ট্রাক বা বাস, পার হতে পারে না। এতে করে দক্ষিণ সুন্দর খাতা, সিংপাড়া, ভাটিয়াপাড়া, বালুরডাঙ্গা, মুকুলের ডাঙ্গা ও বাবুরহাটসহ অন্তত ছয় গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছেন।
সিংপাড়া গ্রামের বাসিন্দা স্বপন কুমার সিং জানান, “সেতুটি এতটাই সরু যে ইট-বালুর ট্রাক উঠতে পারে না। ফলে বাড়ি করতে গেলে ভ্যানে করে মালামাল আনতে হয়, এতে খরচ প্রায় চারগুণ বেড়ে যায়।”
স্থানীয় ব্যবসায়ী আনার আলী বলেন, “এই সেতুর ওপর দিয়ে ছয় গ্রামের মানুষ প্রতিদিন চলাচল করে। কিন্তু সরু সেতুর কারণে রাস্তাগুলোর উন্নয়ন হয়নি। কৃষকরাও তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না।”
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা ইদ্রিস মিয়া বলেন, “একটা রিকশা সেতুতে উঠলে আর কেউ পাশ দিয়ে যেতে পারে না। রেলিং ভাঙা, সেতু ঝুঁকিপূর্ণ—এখন এটি আমাদের গলার কাঁটা।”
বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বলেন, “প্রায় ৩০-৩৫ বছর আগে এলজিইডি ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উদ্যোগে এই সেতুটি নির্মিত হয়েছিল। বর্তমানে এটি এতটাই সরু যে বড় যানবাহন চলতে পারে না, ফলে ছয় গ্রামের মানুষ দুর্ভোগে আছে।”
মুকুলের ডাঙ্গা এলাকার জহির উদ্দিন বলেন, “সিঙ্গাহারা নদীর ওপরের এই ৬ ফুট চওড়া সেতুর কারণে শুধু ছয়টি নয়, আশপাশের ২০ গ্রামের মানুষও ভোগান্তিতে পড়েছে।”
ডিমলা উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেন, “উপজেলায় এমন বেশ কয়েকটি সরু সেতু রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি ভেঙে বড় সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্য সরু সেতুগুলোও বড় করে নির্মাণ করা হবে।”
স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত এ সেতুটি সংস্কার বা বড় করে নির্মাণ না হলে সড়ক দুর্ঘটনা ও দুর্ভোগ আরও বাড়বে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
দৈনিক নতুন সময়ের পত্রিকা