ব্যাপক অনিয়ম ডিমলার এলজিইডির প্রভাতী প্রকল্পের রাস্তার কাজে
মো: ফেরদৗসকিবরিয়া (নয়ন) সম্পাদক ও প্রকাশক :-
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন টুনিরহাটে এলজিইডি ‘প্রভাতী প্রকল্প’-এর আওতায় নির্মিতব্য আরসিসি রাস্তার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে এলজিইডি প্রভাতী প্রকল্পের অধীনে অবকাঠামোগত দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে তিনটি গ্রুপে ভাগ করে এই প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। গ্রুপগুলোর বরাদ্দ ছিল যথাক্রমে:
প্রথম গ্রুপ: ২৭,৭৬,৯৯৩ টাকা
দ্বিতীয় গ্রুপ: ২৬,৯৪,৮৩১ টাকা
তৃতীয় গ্রুপ: ২৬,৬০,৬৭৭ টাকা
২০২৩ সালের ১৩ জুন কাজ শুরু হয়ে ২০২৪ সালের ১২ জুনের মধ্যে সমাপ্ত করার লক্ষ্যে নির্মাণকাজ চলছিল। কিন্তু বিগত সরকারের আমলে প্রথম ও দ্বিতীয় গ্রুপে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এলসিএস সদস্যদের কাছ থেকে ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর নিয়ে কৌশলে প্রকল্পের অর্থ উত্তোলন করা হয়। দেখা যায়, আংশিক কাজ দেখিয়ে পুরো বরাদ্দ প্রায় তুলে নেওয়া হয়। সরকার পরিবর্তনের পর কাজ স্থগিত হয়ে পড়ে।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রকল্পটি পুনরায় শুরু করার নির্দেশনা দিলে সম্প্রতি কাজ আবারও শুরু হয়। কিন্তু নতুন করে আবারও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
গত ৩ জুন (মঙ্গলবার) সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, আরসিসি রাস্তার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে পুরাতন, ভাঙা, নোংরা ও নিম্নমানের ইট। ১/২ ইঞ্চি গ্যাপ রেখে বালু ছাড়া ইট বিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে মিস্ত্রি বিভূতি লালের সঙ্গে কথা বললে তিনি দায় এড়িয়ে বলেন, “স্যারের সাথে কথা বলেন।”
প্রভাতী প্রকল্পের এলসিএস মনিটরিং অ্যান্ড লাইভলিহুড অফিসার মেহেদী ফাহাদ বিন আজাদ (সবুজ)-এর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,
“প্রকল্পের নির্দেশনায় পুরাতন ইট নিচে এবং নতুন ইট উপরে দেওয়ার কথা বলা আছে। কিন্তু আমি উল্টোভাবে কাজ করছি—পুরাতন ইট নিচে দিচ্ছি, নতুন ইট উপরে—যাতে উপরে ভালো ফিনিশিং হয়।”
তবে প্রকল্পের নির্ধারিত সিডিউলে স্পষ্টভাবে ১ নম্বর ইট/পিকেট ইট ব্যবহারের কথা বলা হলেও বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন নেই। চলছে ২ নম্বর ও ভাঙা ইট দিয়ে দায়সারা কাজ। উপজেলা প্রকৌশলী মো. শফিউল ইসলামের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি এবং মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও কোনো সাড়া মেলেনি।
স্থানীয় প্যানেল চেয়ারম্যান মাজেদুর রহমান বুলু বলেন,
“কাজের বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। তবে এলাকাবাসী অনেকেই অভিযোগ করছে যে কাজটি খুবই নিম্নমানের হচ্ছে।”
স্থানীয় জনগণের অভিযোগ, এই অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি অর্থ লুটপাটের পাশাপাশি জনগণের স্বার্থের প্রতি চরম অবহেলা প্রদর্শিত হচ্ছে। তারা অবিলম্বে কাজ বন্ধ করে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও প্রকৃত মান নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
কোন মন্তব্য নেই
দৈনিক সময়ের পত্রিকা