ডিমলায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ উত্তাল আলোচনা সভা

 মোঃ ফেরদৌসকিবরিয়া (নয়ন) সম্পাদক ও প্রকাশক :-

ডিমলা উপজেলা পরিষদ হলরুমে সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে জুলাই অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ আর ক্ষোভে শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশ তৈরি হয়। বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে শুরু হয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী টানটান উত্তেজনার এই সভা শেষ হয় সন্ধ্যা ছয়টার দিকে।

সভায় ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডিমলা উপজেলা কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল আলম সরকার, সদস্য সচিব মোঃ তুষার ইমরান, মুখ্য সংগঠক মাসুদ ইসলাম, জেলা যুগ্ম সদস্য সচিব মাহফুজার রহমানসহ প্রায় দেড় শতাধিক আন্দোলনকারী।

এছাড়া সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক সাইদুজ্জামান বাবু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরানুজ্জামান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মীর হাসান আল বান্না প্রমুখ।

সভায় শিক্ষার্থীরা একে একে অভিযোগ উত্থাপন করেন।

* মাহফুজার রহমান অভিযোগ করেন, জুলাই অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে কয়েকজন নামধারী ছাত্রনেতা এলাকায় আধিপত্য কায়েম করছে, অথচ দায়ভার চাপানো হচ্ছে প্রকৃত আন্দোলনকারীদের ওপর।

* রাব্বি বলেন, তথাকথিত নেতারা প্রশাসনের সহায়তায় ইউনিয়নে মব গড়ে তুলছে ও স্থানীয় প্রতিনিধিদের কণ্ঠরোধ করছে।

* তুষার ইমরান অভিযোগ করেন, “৫ আগস্টের পর হাতেগোনা কয়েকজন প্রশাসনের সহায়তায় নিজেদের প্রতিনিধি দাবি করছে। তারা পরিবারতন্ত্র কায়েম করছে এবং আমাদের মাথা বিক্রি করছে।”

* শাহরিয়ার বসুনিয়া সানি প্রশ্ন তোলেন, “সুবিধাবাজদের দিয়ে প্রশাসন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতির মতো পদে বসাচ্ছে—এটা কি সংস্কার?”

আলোচনার এক পর্যায়ে ক্ষোভ ঘুরে যায় সাবেক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র রাশেদুজ্জামান রাশেদ ও জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক সাকিল প্রধানের দিকে। উপস্থিত অনেকে জানান, আন্দোলনকারীরা তাদের প্রতিও গভীরভাবে ক্ষুব্ধ।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ৫ আগস্ট উপজেলা প্রশাসনের আয়োজিত “জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস” কর্মসূচিতে প্রকৃত আন্দোলনকারীদের সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে।

অভিযোগ শুনে জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক সাইদুজ্জামান বাবু সতর্ক করে বলেন—

“এমন অনিয়ম চলতে থাকলে ছাত্র-যুবশক্তিদের নিয়ে রাজপথে নামতে এক মুহূর্তও দেরি হবে না।”

অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরানুজ্জামান বলেন—“ছাত্রদের মধ্যে এত অভিযোগ আছে—এ ব্যাপারে আমি অবগত ছিলাম না। তবে ভবিষ্যতে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই।”

এ সভা প্রমাণ করে, জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী ডিমলার রাজনৈতিক অঙ্গনে শুধু প্রশাসনের ভূমিকা নয়, নেতৃত্বের প্রশ্নেও গভীর বিভাজন তৈরি হয়েছে।

Post a Comment

দৈনিক নতুন সময়ের পত্রিকা

নবীনতর পূর্বতন